-
Posted by
Hasina Akhtar Nigar March 23, 2019 -
Filed in
Society
-
##জন সচেতনতা
-
1,815 views
নিরাপদ সড়ক পেতে হলে সবার মানসিকতা পরির্বতন করতে হবে
হাসিনা আকতার নিগার
নিরাপদ সড়কের দাবিতে স্কুল কলেজের ছেলেমেয়েরা বারবার রাস্তায় নামছে। কিন্তু এ দাবী প্রত্যাশার জায়গাতে যেতে পারছে না। নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত হতো যদি এখন রাস্তায় চলাচলকারী যানবাহন আর মানুষের মাঝে পরিবর্তন আসত। একটি দুর্ঘটনার পর দাবী উঠে আশ্বাস দেয় সরকার। তারপর সব সেই আগের মত। যানজট, হয়রানি,রাস্তা পরাপারে অনিয়ম সবই চলে । বেপরোয়া যান চলাচল সহ রাস্তা ব্যবহারে মানুষের অসচেতনতা সবই বিদ্যমান।
বছরের পর বছর যা চলে আসছে তা আন্দোলন করে সমাধান করা যাবে না।বরং সবার মানসিকতা পরির্বতন করা দরকার আগে।
সড়ক যানবাহনে যে অনিয়ম দূর্নীতি রয়েছে তার সাথে জড়িত আছে প্রশাসন সহ পুলিশের বেশ কটি সেক্টর। যা দিয়ে পার পেয়ে যায় ফিটনেসবিহীন যানবাহন আর লাইন্সেস ছাড়া ড্রাইভার। ট্রাফিক সপ্তাহে হলে দেখা যায় মামলার ভয়ে গাড়ি আর ড্রাইভাররা রাস্তায় বের হয় না। কারণ তারা জানে ট্রাফিক সপ্তাহ শেষ হলে আবার সব কিছু ম্যানেজ করে তারা গাড়ি চালাতে পারবে। ড্রাইভারদের কথা হলো কথায় কথায় কাগজ পত্র চেক করে ঠিক থাকলেও তাদের মামলার হয়রানির শিকার হতে হয়।আর না হয় দিতে হয় ঘুষ।তাহলে কাগজ পত্র নবায়ন করে কি লাভ।
এসব সমস্যার পাশাপাশি যে বিষয়টা সমাধান অযোগ্য তা হল পথচারী সহ যানবাহনের ট্রাফিক আইন অমান্য করা।
মহা সড়কে যাত্রী বোঝাই গাড়ী আর মালামালে বহনকারী ট্রাক যে ভাবে পাল্লা দিয়ে চলে। তা দেখে মনে হয় মানুষের জান মালের কোন তোয়াক্কা তারা করে না। ভারী যানবাহনের পাশাপাশি প্রাইভেট গাড়ী রিকসার চাপে শহরে যানজটের দূর্ভোগ অসহনীয়। ফুটওভার ব্রীজগুলো হয় খালি না হয় ব্যবসায়ীদের দখলে। তার উপরে মানুষের ধারনা রাস্তা পারাপারে ফুট ওভার ব্রীজে ব্যবহার করতে গেলে সিড়ি বেয়ে সময় নষ্ট হবে। বরং গাড়ির গতিরোধ করে বা ডিভাইডারের ফাঁকে দিয়ে কসরত করে বেরিয়ে যেতে পারলে হয়।
দূর্ঘটনায় এত জীবন অকালে চলে যাবার পরেও মন মানসিকতার কিঞ্চিত পরিবর্তন হয়নি মানুষের।সবচেয়ে লক্ষ্যনীয় বিষয় হলো, এই মানুষগুলো যখন দেশের কোন সেনানিবাসের রাস্তায় চলাচল করে তখন তাদের বলে দিতে হয় না কিছু। কথায় আছে 'ডান্ডার ভয় সবাই পায়'। যে কাজটা সেনানিবাসে সহজে হয় সেটা সাধারণ ভাবে কেন হবে না।এর উত্তর একটাই বুঝে শুনে ভুল বা অন্যায় করা এ দেশের মানুষের রন্ধ্রে রন্ধ্রে বাসা বেধেঁছে।দূর্নীতি অন্যায় আর আইন না মানার জন্য ঘুষ দিয়ে পার পাবার পথ বন্ধ না হলে কিছুর পরির্বতন হবে না।
বড় ফ্লাইওভার হচ্ছে কিন্তু সে ফ্লাইওভারগুলো কেন যথাযথভাবে হচ্ছে না তা খতিয়ে দেখার কোন সময় কারো নেই।বর্ষা এলেই শুরু হয় রাস্তা সংস্কারের কাজ।সারাদেশের রাস্তাগুলো এতটাই খারাপ অবস্থা মানুষ জীবন হাতে নিয়ে চলাচল করে। সব মিলেয়ে কোথাও কিছু পরির্বতনের লক্ষন নেই।
বাংগালী সব কিছুতে সহজ পথ খুঁজে আর নিয়ম ভাংগে চলাতে নিজের সাহসিকতার প্রকাশ বলে মনে করে।
তাই যদি দেশের শতকরা ৫০ ভাগ মানুষও নিজেকে বদলাতে পারে তবে একটা আশার আলোর প্রদীপ দেখা যেত রাস্তা ঘাটে। কিন্তু সেই প্রবাদ বাক্য এ দেশে প্রযোজ্য - 'কয়লা ধুয়লে ময়লা যায় না,সবাভব যায় না মলে'।' সুতরাং মানুষের মানসিকতার পরির্বতনের ছাড়া কিছু হবে না। যদি হতো নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের একটা প্রভাব থাকত বর্তমান জনজীবনে।