-
Posted by
Hasina Akhtar Nigar March 23, 2019 -
Filed in
Society
-
## Bangladrsh
-
1,913 views
জানতে হবে সকল মুক্তিযোদ্ধার যুদ্ধকথা
হাসিনা আকতার নিগার
বাংলাদেশ আর বাংগালী এতটাই দূর্ভাগা জাতি যে স্বাধীনতার ৪৮ বছরে এসে ও দেশে মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তালিকা হয়। রাজনৈতিক আবহ পরির্বতনের সাথে সাথে বদলে যায় নামের তালিকার। কিন্তু এ কথাটা কেউ মনে রাখে বয়সের সীমারেখাতে ৭১ এর কিশোর মুক্তিযোদ্ধাও এখন বৃদ্ধ বয়সে উপনীত। অনেকে ছেড়ে গেছে পৃথিবী। এতে করে বিশাল তালিকাতে অনেক সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধার ঠাঁই মিলে নাই।বরং মুক্তিযোদ্ধা সেজে ফায়দা নিচ্ছে কিছু সুবিধাভোগী লোক। যা অনেক সময়ই উঠে এসেছে গন মাধ্যমে।
বছর ঘুরে আসে সার স্বাধীনতা দিবস। এ দিবসকে ঘিরে নানা অনুষ্ঠান আর মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে স্মৃতিচারন করে ৭১এর বীর যোদ্ধারা।
সময়ের সাথে সাথে চির বিদায় নিচ্ছে অনেক মুক্তিযোদ্ধা। যার ফলে ইতিহাসের অনেক অজানা কথা জানা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দেশের মানুষ। তবে অনেক হারানোর বেদনাতে আশার প্রদীপ হয়ে কাজ করছে মুক্তিযুদ্ধের ধারক ও বাহক বর্তমান আওয়ামী সরকার। কালান্তরে হারিয়ে যাবার আগে চেষ্টা করছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে। যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অক্লান্ত পরিশ্রম আর আগ্রহের ফসল।
আক্ষরিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধের সময় সীমা ৯ মাস হলেও এর ইতিহাস সুদীর্ঘ। সে কারনে বলা হয় ১৯৭১ সালে ৫৬ হাজার বর্গমাইলের প্রতিটি ঘরেই ছিল দূর্গ আর প্রতিটি মানুষই ছিল মুক্তিযোদ্ধা। সম্মুখ সমরের বীর সেনাদের নানাভাবে সহযোগিতা করেছে শহর গ্রামের নারী, পুরুষ কিশোর কিশোরী সম্মিলিতভাবে। আর যুদ্ধ সময়ের গল্প আছে সকল ঘরে। তাই বলা হয়, প্রতিটি অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা করার আগে যদি রাজাকারের তালিকা করা উচিত ছিল। তাহলে অন্তত নব্য মুক্তিযোদ্ধারা তালিকাতে স্থান পেত না।
স্বাধীনতার ইতিহাস এদেশ থেকে হারিয়ে যাবে এমন শংকা অন্তত আর নেই। এখন ত্রিশ লক্ষ শহীদদের প্রানের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে দেশের মানুষ শ্রদ্ধা ভরে পালন করে প্রতি বছর।
কিন্তু মুক্তিযুদ্ধকে ঘিরে অনেক কর্মযজ্ঞের মাঝে একটা বেদনাহত সুর রয়েছে এখন অবধি। ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ রাতের আগেই দেশের প্রত্যন্ত গ্রামের ছেলেরা নিজেদের প্রস্তুত করে যুদ্ধের জন্য। যদিও গ্রাম বাংলার সাধারণ মানুষ রাজনৈতিক জটিলতা বুঝত না।কিন্তু বংগবন্ধুর ৭ ই মার্চের ভাষনে তারা বুঝে গিয়েছিল নিজেদের জন্য একটা আলাদা পতাকা,আলাদা দেশ প্রয়োজন। লড়াইটা হবে অস্তিত্বের।.গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মুক্তিযোদ্ধাদের তখনকার চিন্তার বহিঃপ্রকাশ এটি ।
১৯৭১ সালের দুর্ধর্ষ মুক্তিযোদ্ধার লড়াইয়ের গল্প শুনে যেমন মনে হয়, 'কেন সেদিন যুদ্ধের মাঠে ছিলাম না।' তেমনি গ্রামে থাকা যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার আহত হবার ঘটনা শুনে অশ্রুসিক্ত নয়নে ভাবি, 'আহা কতটা অসহায় তিনি ছিলেন সেদিন যুদ্ধ ক্যাম্পে। অসুস্থ অবস্থায় কত আহজারি ছিল আপনজনকে কাছে পেতে।'
সত্যিকারভাবে আর্মি, ই পি আর,আনসার সহ শহর - গ্রামের এক একজন মুক্তিযোদ্ধা ইতিহাসের এক একটি অংশ। সুতরাং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে জানতে হলে প্রত্যন্ত গ্রামঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধকালীন সময়কে জানতে হবে। যেতে হবে তাদের কাছে। তারা হয়তবা ধারবাহিকতা রেখে বলতে পারে না যুদ্ধের সব কিছু। কারণ ৪৮ বছর আগের কথা বয়সের কারনে এলোমেলো হয়ে যায়। তবুও তারা আবেগময় হয়ে আপন মনে বলে নিজেদের যুদ্ধের কথা। এমন প্রেক্ষাপটে বলতে হয় - "গোটা মানচিত্র আমাদের মুক্তিযুদ্ধ। আর এ যুদ্ধের সকল যোদ্ধাদের যুদ্ধ কথন শুধু তাদের জীবনের গল্প নয়। এ গল্প জানতে হবে জাতিকে। আর তাই বাংগালী জাতির মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে সঠিকভাবে সম্পূর্ণ করতে হলে কাজ করতে হবে তৃর্নমূলের মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে নিঃসন্দেহাতীতভাবে।