-
Posted by
Hasina Akhtar Nigar March 28, 2019 -
Filed in
Society
-
## Education
-
2,185 views
গুড টাচ ব্যাড টাচ
হাসিনা আকতার নিগার
৫ বছরের মিমি মায়ের হাত ধরে স্কুলে যায়। কিন্তু মেয়েকে স্কুলে আর বেশি দিন সুজাতা আনা নেয়া করতে পারবে না। শুধু মেয়ের কথা চিন্তা করে মাঝে মাঝে তার চাকরি ছেড়ে দিতে ইচ্ছে করে। কিন্তু তাও এ বাজারে অসম্ভব। সুজাতা আর তার স্বামী মিলে চাকরি করে বলেই মিমিকে একটা ভালো স্কুলে পড়াতে পারছে। মেয়ের প্রথম স্কুল যাওয়ার কারনে অফিস থেকে ছুটি নিয়েছিল। এখন অনেকটাই অভ্যস্ত হয়ে গেছে মিমি স্কুলে। কান্নাকাটি করে না। স্কুল থেকে এসে গল্প করে টিচার আর বন্ধুদের নিয়ে। সুজাতার মনে হয় তার মেয়েটা বড় হয়ে যাচ্ছে।
দুপুরে মা মেয়ে বিছানায় শুয়ে শুয়ে গল্প করতে গেলে মিমি হঠাৎ হাসতে শুরু করে। সুজাতা অবাক হয়ে বলে - কি রে পাগলী হাসছি কেন।
মিমি বলে - জানো মা, টিচার বলেছে প্যারেন্টসদের নেক্সট সানডে ক্লাস নিবে। মা তুমিও আমার সাথে সেদিন পড়বে স্কুলে কি মজা!
সুজাতা মেয়ের হাসি থামিয়ে বলতে বলে -
এবার বলো দেখি টিচার কি পড়াবে আমাকে?
মিমি তখন বলে আজ ক্লাসে টিচার তাদের শিখিয়েছে গুট টাচ, ব্যাড টাচ। বলছে কেউ যেন আমাদের বডিতে হাত না দেয়। যদি কেউ ব্যাড টাচ করে তাহলে মা বাবা টিচারদের বলতে বলেছে। ছবি এঁকে দেখিয়েছে গুড টাচ,ব্যাড টাচ।
আর বলেছে এ জন্য সানডেতে তোমাদেরকেও টিচার ক্লাশ নিয়ে সব শিখিয়ে দিবে। মা তুমি কিন্তু ভাল করে সব শিখে নিবে। কথাগুলো বলতে বলতে মিমি ঘুমিয়ে পড়ে।
সুজাতা যেন একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস পেয়েছে কথাটা জেনে। যে বিষয়টা নিয়ে ভয় পাচ্ছিল তার সমাধান স্কুল করে দিয়েছে। মেয়ে বুঝে গেছে কোনটা ভালো টাচ আর কোনটা মন্দ।
আসলে যুগের পরির্বতনের সাথে সাথে সচেতনতা বাড়ছে। তাদের সময় স্কুল পরিবার কেউই ছোট বাচ্চাদের সাথে এসব নিয়ে কথা বলত না। ভাবত এসব লজ্জাকর বিষয়। যার কারনে অনেক তিক্ত অভিজ্ঞতা মেয়েরা সারাজীবন বয়ে বেড়াচ্ছে।
সানডে তে স্কুলকে ধন্যবাদ দিতে হবে। তারা যে পড়ালেখার পাশাপাশি এ ছোট ছোট শিশুকে সচেতন করছে নিজেদের বিষয় এটা অনেক বড় প্রাপ্তি। আর সে সাথে অভিভাবকরাও যে তাদের সন্তানদের সাথে নিজেদের সচেতন করার শিক্ষাটা পাবে এটা খুব দরকার। এখনও অনেক মা বাবা মনে করে সন্তানকে শরীর সম্পর্কীয় কিছু বিষয় বলা যায় না। লজ্জাকর বিষয় এসব। তেমন মা বাবাকেও বুঝতে হবে দুশ্চিন্তা করার চেয়ে সচেতনতা জরুরি।