-
Posted by
Hasina Akhtar Nigar April 3, 2019 -
Filed in
Family & Home
-
##children
-
1,742 views
সুন্দর জীবন দিতে শিশুদের অতি শাসন বা আদর নয়।
হাসিনা আকতার নিগার
একটি শিশু বড় হবার সাথে সাথে তার আচরনগত পরির্বতন শুরু হয়। বয়স ৩ পেরোতেই মা বাবার টেনশন বাড়তে থাকে। আর এখন তথ্য প্রযুক্তির কারনে এ বয়সে সে চিনে যায় গেমস মোবাইল সহ নানা কিছু।শহরের বাচ্চাদের জীবন বলতে গেলে কার্টুনময়। আবার ব্যস্ত জীবনে মা বাবাই হাতে তুলে দেয় টিভির রিমোট বা মোবাইল।
কিন্তু স্বাভাবিক ভাবে একটা শিশু কে বড় করতে হলে পারিবারিক ভাবে কিছু বিষয় শিখাতে হবে ছোট থেকেই। আজকাল বাচ্চারা শেয়ারিং বিষয়টা বুঝতে চায় না। নিজেদের আবদার বায়না পূরন করতেই হবে এমন মানসিকতা থাকে তাদের।
বাচ্চা চঞ্চল বা শান্ত যে প্রকৃতির হোক তাকে মাত্রাতিরিক্ত শাসন বা আদর না করে বুঝাতে হবে ঠিক বেঠিক। প্রাত্যহিক জীবনে তার যে নিয়মে থাকা দরকার তা না মানলে এর জন্য শাস্তি দিলে হয়ত জিদ চেপে যাবে। এর চেয়ে বরং তাকে গল্পচ্ছলে সহজ করে বুঝাতে হবে সে ভুল করেছে। আর এমন ক্ষেত্রে শাস্তি দিতে হলে তা কোনভাবে শারিরীক আঘাত হবে না। যদি খেলতে গিয়ে ব্যাথা পায় কিংবা অন্য কারো সাথে ঝগড়া করে তাহলে সে খেলা তাকে একটা সময় পর্যন্ত খেলতে দেয়া যাবে না। এমন শাস্তির অর্থ তাকে বুঝিয়ে দিতে হবে।
স্কুল পাঠানোর আগে শিখাতে হবে নিজের কাজ নিজে করতে হবে সময় মতো। দেখা যায় বাচ্চারা ঘন্টার পর ঘন্টা সময় পার করে দেয় গেমস আর কার্টুন দেখে। যা তার চোখের জন্য ক্ষতিকর। সুতরাং তাদের টিভি গেমস এসবের জন্য সময় বরাদ্দ করে দিতে হবে। এর পাশাপাশি বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। কবিতা আর্ট দিয়েই শুরু করতে হবে ঘরে স্কুলিং।
শারীরিক কারনে তাদের ঘুম খাওয়া গোসল ব্রাশ করা আস্তে আস্তে নিজেকে করতে হবে সময়মত এটা শিখাতে হবে। এসবের মাঝেই শিশুরা সময় জ্ঞান লাভ করবে।
আজকাল স্কুল মানে প্রতিযোগীতা। শিশুদের বইয়ের বোঝা চাপিয়ে দিয়ে মা বাবা হয়ে যায় অস্থির। সব কিছুতে প্রথম হতে হবে এ প্রবনতাতে জীবন থেকে হারিয়ে যায় হাসি খুশির শৈশব। সিলেবাসের পড়াতে শিশুকে রাত দিন আটকে রেখে মা বাবা নিজেদের স্বাভাবিক পারিবারিক চিত্রটা ভুলে যায়। এ ক্ষেত্রে প্রথমে বুঝতে হবে বাচ্চার আগ্রহ কিসে। তার সে আগ্রহকে প্রাধান্য দিয়ে নিয়ম মাফিক লেখা পড়া করাতে হবে। প্রতিযোগিতা থাকবে কিন্ত সব কিছুতে সবাই প্রথম হয় না এটাই বাস্তবতা। অভিভাবকরা অবুঝ শিশুর মত হলে চলবে না।
তাদের সামনে বড়রা কথা বলার সময় খেয়াল রাখতে কোনটা বলা উচিত কোনটা অনুচিত । কারন শিশুরা অনুকরণ প্রিয়। বড়দের অনুকরণ করতে গিয়ে অনেক সময় তারা বিব্রতকর পরিস্থিতির তৈরি করে।
আমার সন্তান বিশ্ব জয় করবে এ আশা সকল মা বাবার। কিন্তু বিশ্ব জয়টা করতে গিয়ে সন্তানকে অতি বেশি আদর বা শাসন হিতে বিপরীত হয় না যেন তা খেয়াল রাখতে হবে। নিয়ম এর অনুশাসনে জীবন গড়ার অভ্যাসটা জরুরি। সুস্থ সুন্দর ভাবে মানুষ হবার শিক্ষাটা দিতে পারলে সন্তান নিয়ে দুঃশ্চিতার কিছু থাকবে না। ভুলে গেলে চলবে না -
'ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা
সব শিশুদের অন্তরে।"