সোনার শিকল ভাংগতে হবে মেয়ে


  • সোনার শিকল ভাংগতেই হবে মেয়ে

    -হাসিনা আকতার নিগার

    ক'দিন ধরেই এক নারী অবরুদ্ধ জীবনের কথা শুনে নিজের ভিতর এক যন্ত্রনা অনুভব করছি। তার পিতৃ ভালোবাসা, লোক সমাজের ভয়, নিরাপত্তাহীনতার শংকা দেখে মনে হচ্ছে তারে বলি ' শুনো মেয়ে অন্যের চোখে নয় নিজের তৃতীয় নয়ন দিয়ে দেখো নিজেকে। তুমি দুর্বল না। একবার প্রতিবাদ করো। তবে বুঝবে নিজের জন্য নিজের মুক্তি কতটা প্রয়োজন।'
    কিন্তু মেয়েটি যে পরিবার আর সমাজ থেকে উঠে এসেছে সেখানে তাকে প্রাতিষ্টানিক শিক্ষার চেয়ে ধর্মের দোহাই দিয়ে শিখিয়েছে পিতার সম্মান, স্বামী সেবা নারী জীবনে মহান দায়িত্ব ও এক মাত্র কত্যব। পতিব্রতা স্ত্রীকে স্বামীর সব ধরনের আদেশ পালন করে সংসার করতে হবে। প্রেম ভালোবাসা হবে সবামীর চাহিদা ও ইচ্ছামত। শুধু তা নয় যে মেয়ে স্বামীকে নিজের থেকে তালাক দিবে বলে তার স্থান জন্মদাতা বাবার ঘরে হয় না। স্ত্রীর গায়ে হাত তুললে তার প্রতিবাদে শুনতে হয় এটা স্বামীর ভালোবাসার শাসন।কিন্তু একটা মেয়ে নিজের ইচ্ছে গুলোকে গলা টিপে হত্যা করে বন্দী দশাতে পড়ে পড়ে মার খেয়েও কিছু করতে পারে না।কারন সন্তান সহ বেচে থাকার আর্থিক নিরাপত্তার অভাব বোধ করে।
    ধর্মের অনুশাসনে পুরুষ শাসিত সমাজে সবচেয়ে বেশী পিষ্ঠ হয় নারী। আর শিক্ষার উচ্চতর স্থানে অবস্থান করেও আজো অনেক নারী নিজের মত বাঁচার স্বপ্ন দেখতে ভয় পায়।সে একটি বার ও ভাবে না, যে বাবা তার মেয়েটির প্রতি স্বামীর অবিচার দেখে ও ফতোয়া দিয়ে যাচ্ছে মেয়ে হয়ে তালাক দেয়া যাবে না,সে কি সত্যি বাবার সম্মান পাওয়ার যোগ্য নাকি বাবা হিসাবে সন্তানের ভালোবাসা তার প্রাপ্য? অন্য দিকে মেয়েটি স্বামীর সাথে বসবাস করবে না বলে তালাক চেয়েছে যখনি এটা তার পুরুষত্ব এর প্রতি চপোটাঘাত।এমন অপমান এর জবাব দিতে যা করার প্রয়োজন তাই করছে। বল প্রয়োগ করে নিযাতন। ঘর থেকে বের হতে পারবে না।সে স্ত্রীকে তালাক দিতে পারে স্ত্রী তাকে তালাক দিতে পারে না। কারন স্বামী দেবতুল্য। তার জন্য সব সঠিক।
    বাবা কিংবা স্বামী কেউ যে মেয়েটিকে ভালোবেসে না এটা সে বুঝতে চাইছে না। এরা নিজেদের দাম্ভিকতাকে নত করবে না। প্রয়োজনে এ মেয়েকে বলী দিতে পারে ফতোয়া দিয়ে। 'তুমি স্বামীর কথা শুনে স্বামী সন্তান নিয়ে সংসার করো '- এ কথাটিতে তাদের ব্যক্তি সবাথপরতা।
    এখানে প্রেম ভালোবাসা বলে কিছুই যে নেই এ নির্মম সত্যকে ধারন করতে পারলে হয়ত মেয়েটি নিজেই নিজের মুক্তির ঠিকানা খুঁজে পেত।কিন্তু তার ভীরু মনে সমাজের অপবাদ, বাবার বঞ্চনা প্রতি মুহুতে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
    নারী অধিকারের আইনের চেয়ে ধার্মিক পিতার ফতোয়া তার কাছে বেদ বাক্য সম।সত্যি কার ভাবে বলতে গেলে বলতেই হয়, এ সমাজে এখন অবধি নারীদের ভেতর নিজের মত করে বাঁচার জন্য লড়াই করার আস্থা টা জাগ্রত হয়নি।একজন পুরুষ আর একজন নারীর ভালোবাসার বিশ্বস আর আস্থা নিয়ে সংসার হয়।জোর করে শাসনের শিকল দিয়ে বেধে আর যাই হোক সংসার হয় না।
    জানি না মেয়েটি পরনির্ভর না হয়ে সংসার নামের এ কারাগারের শিকল ভেংগে মুক্ত আকাশে প্রান ভরে নিশ্বস নিতে পারবে কিনা কখনো।তবে তাকে আবারো বলব ' কারো জন্য নয় শুধু একটি বার নিজের জন্য বাঁঁচো।' এ ভাবনাতে নিজেকে জাগিয়ে দেখো তোমার শক্তির কাছে পেশী শক্তি, ধর্মের ফতোয়া নগন্য। ধর্মের বুলিতে নয় আইনের আশ্রয় নিয়ে নিজেকে 'স্বামী' নামের পিশাচ থেকে নিজেকে বন্ধন মুক্ত করো।